অথই নূরুল আমিন
বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে সহস্র ঘটনার ইতিহাস থেকে জানা যায়। এই বাঙালি বিনোদন খুব পছন্দ করেন। আপন কাজ ফেলে রেখে বানর খেলা দেখেও সময় নষ্ট করেন। ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য এক শ্রেণির ভন্ড প্রতারকের কাছ থেকে সামান্য হাদিয়া দিয়ে আজমীর শরীফের খাজার দরবারের লাল হলুদ রঙ্গের সুতা হাতে বা গলায় বেধে রাখেন।
আরো হাস্যকর ব্যাপার হচ্ছে। একমাত্র বাঙালির মধ্যে পাওয়া যায়। ভাইয়ের শত্রু ভাই হয়ে এক ভাইয়ের ক্ষতি আরেক ভাই মহা আনন্দেই করে বসেন। তারচেয়েও বড় ব্যাপার হচ্ছে এক প্রতিবেশী আরেক প্রতিবেশীর উন্নয়ন সহ্য করতে পারেন না। শুধু সহ্য নয় ক্ষতিসাধন ও করে বসেন।
প্রিয় পাঠক বা পাঠিকা আপনারা লক্ষ্য করলে দেখতে পারেন। আমাদের দেশে আরেকটি প্রবাদ বাক্য আছে যে, ভাইয়ের থেকে শ্যালকের অর্থাৎ শালার কদর অনেক বেশি। পৃথিবীতে একমাত্র বাঙালি জাতির মন খুবই হালকা। রাগ উঠলে অতি প্রিয় প্রেমিকার কলসিটা পযর্ন্ত ভেঙ্গে দেবে। আবার মন ভালো হলে সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমরা এমন এক জাতিতে পরিণত হয়েছি। আজকে বতর্মানের কথা যদি বলি। সুনামগঞ্জে যখন বন্যা এসে যখন সব তলিয়ে যায়। হাজার হাজার পরিবার যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখানেও এক শ্রেণির উৎসুক জনতা পানি দেখতে যায়। এবং দেখার পর
অনেকেই আনন্দে মেতে উঠে। সেলফি তোলে। পর্যটক হিসাবে নৌ ভ্রমণ করে ইত্যাদি ইত্যাদি।
দেখবেন কেউ নামাজী তিনি মসজিদ ভক্ত। কেউ মাজার ভক্ত। কেউ বলছেন মাজার ভালো না। কেউ বলছেন নামাজ ঠিক না ইত্যাদি ইত্যাদি।
এই হলো আমাদের সমাজ। লক্ষ্য করে দেখুন। প্রফেসর ড. ইউনুস আজকেই বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান হয়ে শপথ নিবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। এখানে ও রয়েছে শত শত মতামত। যার যেভাবে ইচ্ছে মন্তব্য করেই যাচ্ছেন। কেউ বলেছেন স্বাগতম। কেউ বলছেন মানি না। বিভিন্ন গুষ্ঠি বেশ কিছু দোষ উপস্থাপন করছেন। আবার আরেক শ্রেণি উনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে লম্বা লম্বা কলাম লিখছেন। ফেসবুক পোষ্ট দিচ্ছেন।
প্রিয় পাঠক ও পাঠিকাগণ আমার প্রশ্ন হলো এই সমাজের কাছে। আমাদের দেশে কি এমন একজন লোক ওসআছেন। যে উনি কখনও আমাদের দেশের প্রধান হলে দেশের বিশ কোটি লোক এক বাক্যে বলবে। আলহামদুলিল্লাহ্
না আমার জানা মতে এমন একজন লোকও আমাদের দেশে নেই। এই জন্য নেই বলছি যে, মতানৈক্যের বড় ফারাকের মাঝে আছি আমরা সবাই। এই যে বিভাজন এটাকে বলে জাতিগত বিভাজন। এর জন্য দায়ী হলো। তিনটি পন্থা। তার একটি হলো শরিয়ত , মাওলানাদের চমৎকার ফতোয়া। আরেকটি হলো মারফত পীরদের নির্দেশ। তিন নম্বর হলো রাজনীতি। যে দলের যে নেতা আছেন । নেতাকর্মীদের কাছে সেই বড়। এখানে মাহাথীর মোহাম্মদ, নেলসন মেন্ডেলা সহ আর কেউ তাদের নেতার চেয়ে বড় নেই।
এই যে আজকে আমরা বারো মতান্তরের হয়েছি। এখানে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের উন্নয়ন, আমাদের সুস্থ চিন্তা, সুস্থ শিক্ষা এবং সমাজে সারাক্ষণ বিরাজ করছে বিতর্ক নামের একটি মহা সমস্যা। এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে হেয়প্রতিপন্ন করার যে হীন মানসিকতা আমাদের মাঝে সবসময় বিরাজ করে এতে আমরা লোকসানী আছি। শুধু মতামতের গরমিলের জন্য বছরে হাজারো লোককে খুন করা হয়ে থাকে।
5 আগষ্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরকম খবর পেয়ে দেশের তিনটি মতের জনসাধারণের মাঝে উৎসব ভাব প্রকাশ পেয়েছে। এখনও অনেকেই উৎসব করছেন। তবে কোনো কিছু না বুঝেই এই উৎসব অনেকেই করছে যেটাকে বলে হুজুগে বাঙালি।
অথই নূরুল আমিন
কবি কলামিষ্ট ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানী
8/8/ 2024
Leave a Reply