মোঃ সুমন মিয়া,জেলা প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ছোট সিংগুয়া নদী। কিন্তু কালের বিবর্তনে ভরাট হয়ে নদীগুলোর প্রাণ বিলীনের পথে। নাব্য-সংকটে নদীর বুকে আবাদ হচ্ছে নানা ফসল। অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে অনেক নদী। এক সময়ের খরস্রোতা নদীর বুক জুড়ে দেখা দিয়েছে সবুজ ফসলের মাঠ। শুকনো মৌসুমে পানি নেই, বর্ষা মৌসুমে এসব নদীই আবার দুই কূল ছাপিয়ে দুর্দশার কারণ হয়। বর্ষার পানি ধারণক্ষমতা নেই বেশির ভাগ নদীর। এতে বর্ষা মৌসুমে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। নদীগুলো খননের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, সিংগুয়া নদীতে একসময় অনেক স্রোত ছিল। বড় বড় নৌকা, ট্রলার, নানা ধরনের নৌযান চলাচল করত। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে এগুলো হারিয়ে গেছে। নদীতে আর পানিই দেখা যায় না, নদীর স্রোত তো দূরের কথা। বর্ষাকালে যতটুকু পানি আসে সেটা অল্প দিনের মধ্যেই শুকিয়ে যায়।
বর্তমানে সিংগুয়া নদীতে পানি নেই বললেই চলে। নদীর বুকে জেগে উঠেছে চর। সেখানে ধান, পাট, সরিষা, গমসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ হচ্ছে। নদীতে পানি না থাকায় পাড়ের মানুষের দুর্ভোগ অবর্ণনীয়। সেচের জন্য সিংগুয়া নদীর ওপর শতভাগ নির্ভর করতে হয় এলাকার কৃষকদের। বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে পানি সংকটের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। এলাকার কৃষকদের অভিযোগ, একাধিকবার নদী খননের দাবি জানানো হলেও তেমন কোনো সুফল মেলেনি।
ঘাগড়া গ্রামে মিলন মিয়া বলেন, আমরা মনে প্রাণে চাই নদী বেঁচে থাকুক। নদী আমাদের শুধু মাছই দেয় না, সারা বছর চাষাবাদের কাজে সেচের পাশাপাশি নদীর পানিও ভূমিকা রাখে। বর্ষার সময় নদীর পানি চার দিকে ছড়িয়ে পড়ায় ফসলের জমিতে পলি জমে মাটির উর্বরতা বাড়ায়, এতে ফলন বাড়ে। তাই আমরা উল্লেখিত নদীগুলোর খননের জোর দাবি জানাই।
পাকুন্দিয়া উপজেলা পাটুয়াভাঙ্গ ইউনিয়ন বিশুহাটি গ্রামে শরিফ মিয়া বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম এই সিংগুয়া নদীতে ¯শ্রোতধারা দেখেছি, সেখানে অনেকেই স্রোতে ভেসে যেত। স্রোতের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল, নদীতে নামতেই অনেকে ভয় পেয়েছি। অথচ সেই নদী আজ মরা গাঙে পরিণত হয়েছে। এর জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা এই সিংগুয়া নদী খনন করে নদীর স্বাভাবিক জীবন ফেরানোর দাবি জানান।
স্থানীয় বাসিন্দা নাবিল জানান, আমরা আগে সিগুয়া নদীতে অনেক ধরনের মাছ ধরেছি। সারা বছর নদীতে পানি থাকত। কত বড় বড় নৌকা এই নদী দিয়ে বয়ে চলেছে। কিন্তু এখন আর সেই রূপ চোখে পড়ে না। মরে গেছে নদী
কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ওসমান ফারুক জানান, সিগুয়া নদী খননকাজ করা আপাতত না ।কিন্তু এলাকাবাসীর দাবি নদীটি দ্রুত পূণরায় খনন করার।
Leave a Reply