1. admin@alokitoshomachar.com : sh@admin :
সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০৭:১৩ অপরাহ্ন

ছেলের চাকরি হলে প্রবাসী বাবা দেশে ফিরতেন

  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০২৪
  • ১২২ বার শেয়ার করা হয়েছে।

নেত্রকোণা প্রতিনিধি

ঢাকা সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ওমর ফারুক।

ছেলের চাকরি হলে দেশে ফিরবেন বলে আশায় বুক বেধে ছিলেন প্রবাসী বাবা আব্দুল খালেক । ইচ্ছা ছিলো জীবনের বাকি সময় কাটাবেন পরিবারের সাথে । কিন্তু বাবার সে স্বপ্ন আর পূরণ হলো না ছেলে ওমর ফারুকের মৃত্যুতে। ১৮ জুলাই শুক্রবার কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় ওমর ফারুক ।

কান্নাজরিত কন্ঠে ওমর ফারুকের ছোট ভাই আব্দুল্লাহ অনীক বলেন, ভাইয়ের চাকুরি হলেই বাবা দেশে চলে আসতো। কে জানতো বাবার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। আমি কি পারবো ভাইকে নিয়ে দেখা বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে? 

ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজে অনার্স ৩য় বর্ষে শিক্ষার্থী ছিলেন ওমর ফারুক। বাবা আব্দুল খালেক দেশের আসার কথা ছিলো ২৪ জুলাই । ওই টিকেট বাতিল করে ছেলের মরদেহ গ্রহণ করতে ১৯ জুলাই দেশে আসতে হয় তাকে । ২০ জুলাই রবিবার রাতে দুর্গাপুরে দাফন সম্পন্ন হয়। নিহত ওমর ফারক নেত্রকোণা দুর্গাপুরের সিংহা গ্রামের আবুল খালেকের ছেলে।

একই উপজেলার বাখলজোড়া ইউনিয়নের ফজলুল হকের ছেলে রাজমিস্ত্রি জাকির হোসেন (২০) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তার লাশও রবিবারে রাতে নিজ গ্রামে দাফন করা হয়।

এছাড়াও কোটা সংস্কার আন্দোলনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকার উত্তরায় নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়ার মোজাফফরপুর গ্রামের মৃত আসন আলীর ছেলে পান সিগারেট বিক্রেতা আলী হায়দার (৩৬) জীবিকা নির্বাহ করতে রাস্তায় বের হলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে শনিবার ১৯ জুলাই রাতে নিজ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।

নিহত হায়দারের স্ত্রী হাফছা আক্তার বলেন, কোটা সংস্কারের আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় হায়দার। কেন মারল? কে মারল? আমরা এর বিচারও পাবনা এটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে বলে জানান হাফছা।  তিনি আরও জানান, প্রতিদিন রাতে বাসায় ফিরত হায়দার। এখন রাত হলেই নিহতের সন্তানরা তার বাবা আসার অপেক্ষায় থাকে। 

অপরদিকে, কলমাকান্দার বড়খাপন গ্রামের সাফায়াত মিয়ার ছেলে ভ্যান চালক চালক সোহাগ মিয়া (২০) ও কৈলাঠি ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের পোশাক শ্রমিক মজিবুর রহমানের ছেলে নবম শ্রেণীর ছাত্র আহাদুন ওরফে সৌরভ (১৫) নিহত হয়েছে। তাদের মরদেহ নিজ নিজ গ্রামের কবর স্থানে দাফন করা হয়। 

নিহত সোহাগ মিয়ার বাবা সাফায়াত মিয়া বুধবার বিকালে মোবাইল ফোনে জানান, আমার ছেলের কি অপরাধ ছিল যে তাকে গুলি করে মেরে ফেলতে হয়েছে। একটা হাত বা একটা পা ভেঙ্গে দিত। আমি সারা জীবন ঘরে বসিয়ে রেখে পালতাম। তাও আমার ছেলেকে দেখতে পাইতাম।

নেত্রকোনা সদর উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের নন্দীপুর গ্রামের ছেলে রমজান মিয়া (২৪) কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তিনি ঢাকায় আকিজ গ্রুপের সেলসম্যান হিসেবে ভ্যান চালাতেন। তার মরদেহ শনিবার রাতে নিজ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।

নেত্রকোনা জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুরিশ সুপার (ডিএসবি) মো. লুৎফর রহমান জেলায় ছয়টি লাশের দাফন সম্পন্ন হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

 

আপডেট সংবাদ পেতে আলোকিত সমাচার পড়ুন, সংবাদটি শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি