কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জে জমি দখলে নিতে জিম্মি করে জোরপূর্বক ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে কোন অভিযোগ করলে হত্যার হুমকি দেওয়ায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে আত্মগোপনে রয়েছে একটি সংখ্যালগু পরিবার। মঙ্গলবার ২৭ মে রাত ৯টায় কিশোরগঞ্জ শহরের নগুয়া এলাকায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী আশা রানী দাস।

লিখিত বক্তব্যে আশা রানী দাস বলেন, আমার পূর্ব পুরুষের শহরের বত্রিশ এলাকায় জমি রয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বিভিন্ন লোকজন জায়গা জমি জবরদখল করে নিয়ে যায়। বিষয়টি আমাকে অবহিত করেন শোলাকিয়া এলাকার অনু মিয়ার ছেলে মামুন মিয়া ও কাটাখালি এলাকার আঃ সালামের ছেলে কামরুল মিয়া। বিষয়টি জানার পর আমি ও আমার স্বামী জিতেন্দ্র দাস তাদের বিশ্বাস করি। এরপর জমির সকল কাগজ ও ওয়ারিশান সনদ উত্তোলন করে জমা খারিজ করা হয়। এই কাজের জন্য মামুন ও কামরুলকে খরচ বাবদ টাকা প্রদান করি।

পরবর্তীতে ২০২২ সালে আমার নামজারীর বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে করিমগঞ্জের মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে উবায়দুল ইসলাম ও তার লোকজন মোকদ্দমা দাখিল করেন। এরপর সহকারী কমিশনার কাগজপত্র পর্যালোচনা করে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি আদেশের মাধ্যমে আমার জমা খারিজ বহলা রাখেন।

আশা রানী দাস আরও বলেন, আদাশের পর উবায়দুল ইসলাম ও তার লোকজন বিভিন্ন সময় আমাকে ও আমার স্বামী জিতেন্দ্র দাসকে হত্যার হুমকি দয়ে। এবং আমার সঙ্গীয় মামুন ও কামরুলকে ভূমি রেজিষ্ট্রি করে দিতে চাপ প্রয়োগ করে ও ১০ লাখ টাকা দিতে বলে। নিরাপত্তাহীনতার কারণে আমি ও আমার স্বামী আত্মগোপনে চলে যায়। গত রমজান মাসে নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে মামুন ও কামরুল আমার সাথে যোগাযোগ করে জমি বিক্রি করার অফার দেন। একই সাথে তাদের কিছু খরচ দেওয়ার কথা বলেন। তাদের কথাবার্তায় আশ্বস্ত হয়ে কিশোরগঞ্জে আসি। গত ২১ মার্চ ভোরে মামুন ও কামরুল জানায় আইনজীবীর উপস্থিতিতে আলোচনা করে বায়না বাবাদ টাকা লেনদেন করা হবে। সেই কথামত জেলা জজ কোর্টে যাওয়ার পর মোবাইল ফোনে পাট গবেষণা অফিসের কাছে আসতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পর উবায়দুল ইসলাম, মামুন মিয়া ও কামরুল ইসলামসহ অজ্ঞাত লোকজন আমাদের উপর আক্রমন করে। এবং উবায়দুল ইসলাম আমাদেরকে কোর্টে গিয়ে জমির উপর কোন দাবি নাই মর্মে বিচারকের কাছে বলতে বলেন। এসময় ভয়ভীতি দেখিয়ে কয়েকটি কাগজে স্বাক্ষর নেয়। এরপর আবারও আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালত থেকে আবারও কঠোর পাহারায় বিকালে মাইক্রোবাস যোগে হোসেনপুর ব্রীজে রেখে আসে। বিষয়টি মানতে না পেরে বিপর্যস্থ হয়ে পড়ি এবং নরসিংদীতে অবস্থান করি। বিশ্বস্ত হিসেবে মামুন ও কামরুল এমন ঘটনা করবে তা বুঝতে পারিনি। এই ঘটনার পর থেকে কিশোরগঞ্জ আসার সাহস হারিয়ে ফেলি। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দোষীদের বিচার ও নিজের পৈতৃক সম্পত্তি ফিরে পেতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।