নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কিশোরগঞ্জ ইউনিটের প্রভাবশালী সাবেক সেক্রেটারি ও ভাইসচেয়ারম্যান কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁর বিরুদ্ধে বিগত সরকারের আমলসহ বর্তমান সরকারের সময়েও বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ জমা হলেও আলোর মুখ দেখেনি এসব অভিযোগের ঘটনা। কেবল ফাইলবন্ধি হয়েই দূর্নীতি আরো বেগবান হয়েছে বলে দাবি করেছে অভিযোগ জমাকারীরা।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কিশোরগঞ্জ জেলা কমিটির সাবেক কার্যকরি কমিটির সদস্য মোঃ আলমগীর কবির কর্তৃক গত ১৫/০২/২০২২ তারিখে রেডক্রিসেন্টের চেয়ারম্যান বরারব ক্রমিক নং ২৪৪৬ এ দাখিলকৃত অভিযোগে জানা যায়, কমিটির উর্ধতন ব্যক্তিদের যোগসাজসে রাজকীয় চাকুরী করে যাচ্ছেন কিশোরগঞ্জ ইউনিট অফিসার আব্দুল মোতালিব, সেই সাথে অফিসকে জিম্মি করে সেক্রেটারির সহযোগিতায় হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের অর্থ। এ অভিযোগের আলোর মুখ দেখিনি তৎকালীন কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইসচেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান চৌধুরী হেলালের অদৃশ্য শক্তিবলে। অন্য দিকে নিকলীর নানশ্রী এলাকার শফিকুল হক খান বলেন, গত ২ বছর পূর্বে রেডক্রিসেন্টের চেয়ারম্যান বরাবর কিশোরগঞ্জ রেড ক্রিসেন্টের ত্রাণ বিতরণ
অনিয়ম ঘটায় আমি নিজে বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করলেও অভিযুক্ত লুৎফর রহমান চৌধুরী হেলাল, ইউনিট অফিসার আব্দুল মোতালিব ও যুব প্রধান হোসাইন মোহাম্মদ প্রদীপের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগেরও তদন্ত হয়নি বিশেষ ক্ষমতা বলে।
অন্যদিকে গত ২৭/০৪/২০২৫ তারিখে মাননীয় চেয়ারম্যান বরাবর আরেকটি অভিযোগ দায়ের করেছেন মোঃ আলমগীর হোসেন নামের এক ব্যক্তি।
অভিযোগ জমা প্রদানকারী আলমগীর হোসেনের অভিযোগ কাগজে উল্লেখ করা হয় ।
কিশোরগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সাবেক সেক্রেটারি কেন্দ্রীয় ভাইসচেয়ারম্যান লুৎফর রহমান চৌধুরী হেলাল ও ইউনিট অফিসার আবদুল মোতালিব ও অফিস সহকারী আবদুল কাইয়ুমের বিরুদ্ধে ব্যাপক দূর্নীতির করেছেন।
কিশোরগঞ্জের রেড ক্রিসেন্টের একাধিক সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন,হেলাল চৌধুরী ক্ষমতার বলে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অর্থের বিনিময়ে তার আশপাশের এলাকার শতাধিক লোকজনকে চাকরি দিয়েছেন দাবি করেছেন তারা। এছাড়াও, অভিযোগ উঠেছে কিশোরগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর কিশোরগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সাবেক সেক্রেটারি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ২০২২ সনে বিনা ভোটে নির্বাচিত হন। এ সময় তাকে সহযোগিতা করেন রেড ক্রিসেন্টের ইউনিট অফিসার আব্দুল মোতালিব ও অফিস সহকারী আব্দুল কাইয়ুমসহ সন্ত্রাসী বাহিনী। পরে ভাই পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সময় কিশোরগঞ্জ ইউনিটের সদস্যদের ভয়ভীতি ও গুম করার হুমকি দিয়ে থাকেন।আরো অভিযোগ আছে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন আইজিপি হওয়ার পর ইউনিটে নারী কেলেঙ্কারির ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ আছে। সেই সাথে অনেক জমি দখল করেছে বলে অভিযোগ আছে। আর এসব কাজ করেছেন ইউনিট অফিসার আব্দুল মোতালিব ও অফিস সহকারী আব্দুল কাইয়ুমের সহযোগিতায়।
অভিযোগপত্রে আরো জানা যায়, লুৎফর রহমান চৌধুরী হেলাল ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় শত শত কোটি টাকার মালিক হলেন কি করে তা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন অভিযোগকারীরা।
কিশোরগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের আজীবন সদস্যবৃন্দের দাবি এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ গুলো নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হউক।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ রেডক্রিসেন্ট ইউনিটের সেক্রেটারি লুৎফর রহমান চৌধুরী হেলাল বলেন, আমি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্যানেলের বিপরীতে নির্বাচন করে ১৩২ ভোটের মধ্যে ১০২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলাম। আমার বেয়াইন সাবেক মন্ত্রী, আমার ভাই আওয়ামী লীগ নেতা, আমার ভাই পুলিশের আইজিপি ছিলেন সত্যি, কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সকলের সাথে আমার সম্পর্ক ভালো, তবে আমি আওয়ামী লীগ করি না আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা অভিযোগ করে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করছে। তিনি দাবি করেন অভিযোগকারীরাই পিতাপুত্র আমার কাছে বিভিন্ন সময় আসে তাদেরকে আমি আমার সাথে রাখার জন্য তদবীর করে। কিশোরগঞ্জে ৩২ বছর ধরে রেড ক্রিসেন্টে আছি রেড ক্রিসেন্ট মানেই হেলাল চৌধুরী তা সবাই জানে।
সকল ধরনের অভিযোগ তিনি মিথ্যা দাবি করেন।তবে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগের কাগজে দেখা যায় বঙ্গবন্ধু পরিষদ বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট এর উপদেষ্টার ৪ নাম্বারে লুৎফর রহমান চৌধুরী হেলাল লেখা রয়েছে।
উক্ত বিষয়ে ও বর্তমান রেড ক্রিসেন্ট কমিটি নিয়ে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানকে কয়েকবার ফোন দিলেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি